২০শে নভেম্বর, ২০২১ইং।
নিজস্ব প্রতিবেদক।
সংযোগ নিউজ।
ঢাকা : অবহেলা ও অনাদরের কারণে রাজধানীর আদাবর এলাকার খালার বাসা থেকে বেরিয়ে যশোর চলে যাওয়া তিন বোন আর খালার বাসায় ফিরতে চায় না। সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার। বর্তমানে তিন বোনই এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হেফাজতে রয়েছে। তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তীতে সবকিছু হবে।
বিপ্লব কুমার জানান, তিন বোনের বাবা স্কুলশিক্ষক। তারা সপরিবারে উত্তরায় থাকত। ২০১২ সালে তাদের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। কিছুদিন পর তাদের মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরে, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৩ সালে তাদের মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর তিন বোনকে দুই খালা নিয়ে আসেন। তখন থেকে খালার বাসায় থাকত তারা।ওই তিন বোনের মধ্যে জয়নব আরা ও খাদিজা খিলগাঁওয়ে তাদের ছোট খালার বাসায় থাকত। আর রোকেয়া আক্তার নামে ছোট বোন থাকত আদাবরে আরেক খালার বাসায়। তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল না।
সম্প্রতি বড় দুই বোনের এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষ্যে তাদের খিলগাঁওয়ের বাসা থেকে বড় খালা সাজেদা নওরীন আদাবরে তার নিজ বাসায় নিয়ে আসেন। এখানে রোকেয়ার সঙ্গে বড় দুবোনের দেখা হয়। সেখানে তিনজনই খালার বাসায় অনাদর ও অযত্নের ব্যাপার ক্ষোভ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে কাউকে না জানিয়ে যশোর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর তারা তাদের দাদিকে বিষয়টি জানায়। পরে তাদের দাদি যশোর যাওয়ার জন্য তাদের ২ হাজার টাকা বিকাশে পাঠায়। সেই টাকা দিয়ে তারা গাবতলী থেকে যশোরের বাসে উঠে চলে যায়।
বৃহস্পতিবার বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাদের কোন সন্ধান পাচ্ছিল না তাদের খালা সাজেদা নওরীন। এরপর রাতে আদাবর থানায় নিখোঁজ হয়েছে দাবি করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেখানে দাবি করা হয়, তারা তিনজনই টিকটকে আসক্ত ছিল। টিকটকার কোনো চক্রের প্ররোচনায় তারা বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে। আর যেহেতু দুজনের পরীক্ষা চলছিল, তাই তারা পিএসসি, জেএসসির সার্টিফিকেট, পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন ফর্মসহ বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর র্যাব-২ ও সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে তাদের অবস্থান যশোরে শনাক্ত করে। শুক্রবার বিকেলে যশোরের হামিদপুর কোতোয়ালি থানা তিন বোনকে পুলিশের জিম্মায় নেয়। এরপর ডিএমপির একদল পুলিশ গিয়ে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসে।