জানুয়ারী ২১, ২০২১ ইং।
নিজস্ব প্রতিবেদক।
ভোলা : মধুমতি ব্যাংকের ভোলার চরফ্যাশন শাখার ৯ কোটি টাকার অনিয়ম নিয়ে তোলপাড় চলছে ব্যাংক পাড়ায়। আর সেই অনিয়মের তীর যার দিকে সেই ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার গোপন তথ্য তুলে ধরলেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। তবে নিজের দায় না এড়িয়ে বলেন, এসব অনিয়ম বাধ্য হয়েই করেছেন তিনি।
গত ২০ই জানুয়ারী, বুধবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব হলরুমে সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সাবেক ম্যানেজার মো: রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর থেকে মধুমতি ব্যাংকের ভোলার চরফ্যাশন শাখায় চাকুরি করছেন। ম্যানেজার হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। স্থানীয় সাংসদের ভাই জাহিদুল ইসলাম শুভ এবং তার ভাতিজা মধুমতি ব্যাংকের চরফাশন শাখা অফিসার তরিকুল ইসলাম শরিফ নিয়ন্ত্রন করে। ব্যাংকের ক্যাশ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে কোথায় নেন বা কি করেন তা জানাত না। কোটি কোটি টাকা ব্যাংকের ভোল্টে রাখা হতো। তা জনতে চাওয়া হলে তার উপর প্রেশার করা হতো বলে অভিযোগ করেন সাবেক এই ম্যানেজার মোঃ রেজাউল করিম। তিনি আরো বলেন, তার উপর আনিত ১২টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে আট কোটি ৯৫ লক্ষ টাকার গড় মিলের ৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা জাহিদুল ইসলাম শুভ তার বিকাশ ব্যবসার জন্য নিয়ে সেই টাকা আটকে ফেলে। টাকা চাইলে মাত্র ৪৫ লাখ টাকার চেক দেন। প্রায় প্রতিদিনই শুভ ৫/৬/৭ এমনকি ১২ কোটি টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা শরীফ তার ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে আর ফেরত দেয়নি। তারা সব সময়ই এমন টাকা নিয়ে যেতেন আবার বিকেলে অথবা পরের দিন দিয়ে যেতেন। একবার ফেরত দিতে গড়িমসি করেন। এদিকে জাহিদুল ইসলাম ও শরীফ ব্যাংকের ভল্টের টাকা গ্রামীন এন্টারপ্রাইজ, চার দেয়াল ডেকোরেটর, কায়িফ এন্টারপ্রাইজ, মো: জাহিদুল ইসলাম, উপকূল ব্রিকস, মিলন ট্রেডার্স, মা ট্রেডার্স, উপকূল কনস্ট্রাকশন, রুহি ফার্নিচারসহ একাধিক একাউন্টের মাধ্যমে প্রায় লেনদেন করে তারা এসব অর্থ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগ করেন রেজাউল করিম। তারা মধুমতি ব্যাংক চরফ্যাশন শাখাকে পারিবারিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। এই ব্যাংকের মালিকদের মধ্যে স্থানীয় এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যদের ইশারায় চালাতে হত ব্যাংক বলেও অভিযোগ করেন সাবেক ম্যানেজার। উল্লেখ্য ভোলার বাসিন্দা রেজাউল করিম মধুমতি ব্যাংক ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা শাখায় ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর থেকে কর্মরত থাকার পর চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী মধুমতি ব্যাংকের এক অডিট এন্ড ইন্সপেকশনে ১২টি পে-অর্ডারের বিপরীতে তার বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা গড়মিলের অভিযোগ তোলেন। বলা হয় বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হলেও তা পরে ভোল্টে জমা রাখেননি তিনি। তবে রেজাউল করিম বলেন, এসব টাকা তিনি উত্তোলন করে জাহিদুল ইসলামকে ও শরীফকে দিয়েছেন। তারা তা ফেরত দেননি। পরে জাহিদুল ইসলাম ৪৫ লক্ষ টাকার একটি চেক দিলেও তার একাউন্টে অর্থ না থাকায় তো ক্যাশ করা সম্ভব হয়নি।