২৮শে ডিসেম্বর, ২০১৯. সংযোগ নিউজ। ঢাকা : ঢাকা সিটি নির্বাচনে দক্ষিণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী কে হচ্ছেন শনিবার রাতে জানা যাবে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের নজর এখন গণভবনের দিকে।
ঢাকা দক্ষিণের সমীকরণে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তাপস ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণে ভোটের সমীকরণ পাল্টে দিতে পারেন বলেও আলোচনা চলছে।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সন্তান তাপস দক্ষিণে মেয়রপদে দলীয় মনোনয়ন নেয়ার পর থেকেই চলছে নানা গুঞ্জন। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন ‘কঠিন সময়’ যাচ্ছে বলে কেঁদেছেনও। যে কারণে দক্ষিণের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কার ভাগ্যে শিঁকে ছিঁড়বে তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গণে একবার আলোচনা হচ্ছে সাঈদ খোকন আবারও মনোনয়ন পেয়ে যেতে পারেন। আবার জোরালো আলোচনা হচ্ছে তাপসকে নিয়ে। তবে সবকিছুই জানা যাবে শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠক শেষে।
জানা গেছে, শেখ পরিবারের সন্তান তাপসকে নিয়ে আলোচনার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো তার স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে। যাকে এবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে বিতর্কিত কোনো প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তিনি আরো বলেছেন, ‘যাকে জনগণ ভালোবাসে, যার জনপ্রিয়তা বেশি এবং যে প্রার্থী বিজয়ী হতে পারবেন তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
দলের এমন সিদ্ধান্তের কারণে তাপসের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তারা মনে করছেন, একাধিকবারের সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় ফজলে নূর তাপসের আলাদা জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে স্বচ্ছ ইমেজও রয়েছে। ফলে তারই মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
শেখ ফজলে নূর তাপস আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মণির ছোট ছেলে। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ মণির হাতে গড়া সংগঠনটির নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন তার বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারসহ আরও যাদের হত্যা করেছিল ঘাতকরা, তাদের মধ্যে শেখ ফজলে নূর তাপসের বাবা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার মা আরজু মণিও ছিলেন। তখন তাপসের বয়স ছিল ৪ বছর আর বড় ভাই শেখ ফজলে শামস পরশের বয়স ছিল ছয় বছর।
এছাড়া ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচিত হওয়া তাপস ২০১৪ ও ২০১৮ মিলিয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হন পুরান ঢাকার কিছু অংশসহ ঢাকা-১০ আসনে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাপসের নেতৃত্বে চলছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
অন্যদিকে প্রয়াত মেয়রের ছেলে সাঈদ খোকন গত পাঁচবছরে বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত কথাবার্তা বলে সমালোচিত হয়েছেন।উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা, যথাসময়ে উন্নয়ন কাজ শেষ করতে না পারা,স্বজনপ্রীতি ও মেয়র থাকাবস্থায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদেশ সফরের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।এসব কারণে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে এই বদনামের ভাগিদার হতে হয়েছে।
তাই স্বচ্ছ ইমেজ ও বিতর্কিত নন এমন প্রার্থী বাছাই করা হলে সাঈদ খোকন বিপদে পড়ে যেতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
যদিও কদিন আগে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণে গ্রহণযোগ্যতা পাবেন এমন যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে হয়তো সাঈদ খোকনকেই আবার বেছে নেয়া হতে পারে। পরে অবশ্য হঠাৎ করে তাপস মাঠে নামায় খোকনের মনোনয়ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।