০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯. সংযোগ নিউজ।
ঢাকা : রায় ঘোষণার পর আইএসের প্রতীক সম্বলিত টুপি পরে আদালত কক্ষ থেকে বের হন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জঙ্গি রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম।
রায় ঘোষণার পর আইএসের প্রতীক সম্বলিত টুপি পরে আদালত কক্ষ থেকে বের হন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জঙ্গি রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম।
হোলি আর্টিজান বেকারি হামলা মামলায় রায়ের পর দুই আসামি আইএসের যে টুপি পরেছিলেন তা কারাগার থেকে আনা হয়নি। এমনটাই ওঠে এসেছে কারা অধিদপ্তর থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। আগামীকাল রোববার প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হবে।
আজ শনিবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কারা তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রিজন) কর্নেল আবরার হোসেন। তিনি জানান, আগামীকাল এই প্রতিবেদন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশার কাছে জমা দেওয়া হবে। এই কমিটির সদস্য সংখ্যা তিন।
কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, তাঁরা কারাগারের সংশ্লিষ্ট স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছেন। কারাগারে কর্তব্যরত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কারা অধিদপ্তরের তদন্তে উঠে এসেছে, ওই দিন জঙ্গিরা কারাগার থেকে কোনো টুপি নিয়ে বের হয়নি। সেদিন আদালতে আনার সময় প্রিজন ভ্যানে তোলার আগে তল্লাশি করা হয়েছিল। তখনো কোনো টুপি পাওয়া যায়নি। এমনকি আদালত থেকে এই আসামিদের কারাগারে ফেরত আনার পরও তল্লাশি করা হয়। সে সময়ও এমন কোনো টুপি তাদের কাছে পাওয়া যায়নি।
গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত বুধবার। রায়ের পর আসামি রাকিবুল হাসান (রিগ্যান) আইএসের প্রতীকসংবলিত টুপি পরে এজলাস থেকে বের হন। এরপর প্রিজন ভ্যানে তোলার পর একই ধরনের টুপি দেখা যায় আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহাঙ্গীর আলমের (রাজীব গান্ধী) মাথায়। এরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই টুপি আদালত পাড়া থেকে নয় কারাগার থেকেই জঙ্গিরা এনেছে ।
তখন পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেছিলেন, কারাগার প্রাঙ্গণে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাঁরা দেখেছেন। জঙ্গি রাকিবুল আদালতের হাজতখানা থেকে মাথায় টুপি পরে বের হন। সেই টুপিই পরে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় তিনি উল্টিয়ে পরেন বলে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়ংকর জঙ্গি হামলা স্তম্ভিত করেছিল পুরো বাংলাদেশকে। বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় এই মামলার রায় দেওয়া হয় গত বুধবার।
এতে সাঁত আসামিকে দণ্ড ও একজনকে খালাস দেওয়া হয়। ফাঁসির দণ্ড পাওয়া সাত আসামি হলেন, রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ। খালাস পান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
জঙ্গিদের এই হামলায় ওই দিন ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিক নিহত হন। যাঁদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি। পুলিশের তদন্তে এসেছে, এই হামলায় জড়িত গোষ্ঠীর নাম নব্য জেএমবি, যারা ঘটনার পর নিজেদের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট) বলে দাবি করেছিল।
ওই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অভিযান চালিয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এসব অভিযানে নিহত হয়েছেন, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীসহ জড়িত গুরুত্বপূর্ণ আট জঙ্গি। আর হোলি আর্টিজানে আক্রমণকারী পাঁচ জঙ্গি নিহত হন ঘটনার পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে।